Sunday, May 17, 2009
[Yoga] ইয়োগা: সুদেহী মনের খোঁজে ।৫৫। আসন: রাজকপোতাসন।
ইয়োগা: সুদেহী মনের খোঁজে ।৫৫। আসন: রাজকপোতাসন।
রণদীপম বসু
# রাজকপোতাসন (Rajakapotasana):
আসন অবস্থায় দেহটিকে কপোতের মতো দেখায় বলে এ আসনকে রাজকপোতাসন (Rajakapotasana) বলা হয়।
পদ্ধতি:
উপুড় হয়ে সটান শুয়ে পড়ুন। কনুই থেকে ভাঁজ করে দু’হাতের তালু বুকের দু’পাশে মাটিতে স্থাপন করুন। এবার হাঁটু ভাজ করে হাঁটু থেকে পায়ের অগ্রভাগ উপরে উঠিয়ে আনুন এবং হাতের তালুতে ভর রেখে মেরুদণ্ড বাঁকিয়ে কোমর থেকে বুক ঘাড় মাথা ধীরে ধীরে উপরের দিকে উঠিয়ে এনে ব্রহ্মতালু পায়ের পাতায় স্পর্শ করুন। এ অবস্থায় হাত দুটো সোজা থাকবে এবং দণ্ডের মতো ঠেকা দিয়ে শরীরের উর্ধ্বাংশকে পেছনের দিকে ঠেলে রাখবে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০সেঃ থেকে ৩০সেঃ এ অবস্থায় থাকুন।
এরপর হাত, মাথা নামিয়ে কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে ২/৩ বার আসনটি এভাবে অভ্যাস করুন।
নতুন অভ্যাসকারীদের জন্য প্রথম প্রথম হয়তো মাথা পায়ের তালুতে স্পর্শ করানো সম্ভব হবে না। এতে জোর করে শরীরে চাপ প্রয়োগের দরকার নেই। প্রথমাবস্থায় শরীর যতটুকু বাঁকানো যায় সে অবস্থা থেকেই নিয়মিত অভ্যাস করা যেতে পারে।
উপকারিতা:
আসনটিতে হাত, পা, ঘাড়, গলা, মুখ, বুক, পেট, পিঠ, কোমর, উরু ও মেরুদণ্ডের ওপর প্রচণ্ড চাপ পড়ে। ফলে এসব অঞ্চলের স্নায়ুতন্ত্র ও পেশী সতেজ ও সক্রিয় থাকে, মেরুদণ্ডের হাড়ের জোড় নমনীয় থাকে। বুকের গঠন সুন্দর ও সুঠাম হয়ে গড়ে ওঠে। এ আসনের পর পর জানুশিরাসন বা মেরুদণ্ড সামনের দিকে বাঁকানো যায় এমন আসন করে নেয়া উচিৎ।
নিষেধ:
যাদের উচ্চরক্তচাপ বা হৃদরোগ আছে, রোগ নিরাময় না হওয়া পর্যন্ত এ আসন অভ্যাস করা উচিৎ নয়।
# একপদ রাজকপোতাসন (Eka Pada Rajakapotasana):
পদ্ধতি (ক):
প্রথমে দু’পা ছড়িয়ে সোজা হয়ে বসুন। এবার ডান পা হাঁটু থেকে ভাঁজ করে পায়ের গোড়ালি এনে উরুসন্ধিতে স্থাপন করুন। এখন হাত দুটো কোমরের দুপাশে মাটিতে স্থাপন করে হাতের উপর শরীরের ভর এনে বাঁ পা ঘুরিয়ে সোজা পেছন দিকে নিয়ে যান এবং হাতের উপর থেকে শরীরের ভাব সরিয়ে নিন।
এবার বাঁ পায়ের হাঁটু ভাঁজ করে পায়ের পাতা শরীরের দিকে তুলে আনুন এবং কোমর থেকে শরীরটাকে বাঁ দিকে মোচর দিয়ে বাঁ হাতের কনুই মাটির সমান্তরালে তুলে কনুই দিয়ে বাঁ পায়ের চেটো এমনভাবে ঠেকিয়ে রাখুন যেন সরে না যায়। এবার ডান হাত মাথার উপর দিয়ে ঘুরিয়ে এনে বাঁ হাতের আঙৃল ধরুন। দৃষ্টি সামনের দিকে থাকবে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০সেঃ থেকে ৩০সেঃ এ অবস্থায় থাকুন।
এরপর হাত-পা আলগা করে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে পা ও হাত বদল করে একইভাবে আসনটি আবার করুন।
এভাবে ২/৩ বার আসনটি অভ্যাস করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।
পদ্ধতি (খ):
প্রথমে দু’পা ছড়িয়ে সোজা হয়ে বসুন। এবার ডান পা হাঁটু থেকে ভাঁজ করে পায়ের গোড়ালি এনে উরুসন্ধিতে স্থাপন করুন। এখন হাত দুটো কোমরের দুপাশে মাটিতে স্থাপন করে হাতের উপর শরীরের ভর এনে বাঁ পা ঘুরিয়ে সোজা পেছন দিকে নিয়ে যান এবং হাতের উপর থেকে শরীরের ভাব সরিয়ে নিন। এবার বাঁ পায়ের হাঁটু ভাঁজ করে পায়ের পাতা শরীরের দিকে তুলে আনুন এবং হাত দুটো মাথার উপর দিয়ে নিয়ে গিয়ে বাঁ পায়ের আঙৃল শক্ত করে ধরুন এবং একই সাথে কোমর থেকে শরীরের উর্ধ্বাংশ ও ঘাড় পেছনের দিকে বাঁকিয়ে চিৎ হয়ে ব্রহ্মতালু পায়ের পাতায় স্পর্শ করুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০সেঃ থেকে ৩০সেঃ এ অবস্থায় থাকুন।
এবার হাত-পা আলগা করে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে পা বদল করে একইভাবে আসনটি আবার করুন।
এভাবে ২/৩ বার আসনটি অভ্যাস করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।
উপকারিতা:
আসনটিতে হাত, পা, ঘাড়, গলা, মুখ, বুক, পেট, পিঠ, কোমর, উরু ও মেরুদণ্ডের ওপর প্রচণ্ড চাপ পড়ে। ফলে এসব অঞ্চলের স্নায়ুতন্ত্র ও পেশী সতেজ ও সক্রিয় থাকে, মেরুদণ্ডের হাড়ের জোড় নমনীয় থাকে। বুকের গঠন সুন্দর ও সুঠাম হয়ে গড়ে ওঠে। এ আসনের পর পর জানুশিরাসন বা মেরুদণ্ড সামনের দিকে বাঁকানো যায় এমন আসন করে নেয়া উচিৎ।
নিষেধ:
যাদের উচ্চরক্তচাপ বা হৃদরোগ জনিত সমস্যা রয়েছে, রোগ নিরাময় না হওয়া পর্যন্ত এ আসন অভ্যাস করা উচিৎ নয়।
আসন বৈচিত্র্য:
@ একপদ রাজকপোতাসন (গ) (Eka Pada Rajakapotasana):
@ একপদ রাজকপোতাসন (ঘ) (Eka Pada Rajakapotasana):
@ অর্ধ-কপোতাসন (Ardha-kapotasana):
@ দণ্ডায়মান একপদ রাজকপোতাসন (Dandayamana Ekapada Rajakapotasana):
[Images: from internet]
(চলবে...)
পর্ব: [৫৪][**][৫৬]
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment