Friday, May 22, 2009

[Yoga] ইয়োগা: সুদেহী মনের খোঁজে ।৬৯। মুদ্রা : নৌলী মুদ্রা।


ইয়োগা: সুদেহী মনের খোঁজে ।৬৯। মুদ্রা : নৌলী মুদ্রা।
রণদীপম বসু

# নৌলী মুদ্রা (Nauli Mudra):
উড্ডীয়ান মুদ্রা ভালোভাবে রপ্ত করতে না পারলে মৌলী (Nauli Mudra) করা সম্ভব হয় না। মূলত উড্ডীয়ানই নৌলীর ভিত্তি। দাঁড়িয়ে নৌলী চর্চা অপেক্ষাকৃত সহজ।

পদ্ধতি:
প্রথমে উড্ডীয়ান ভঙ্গিমায় দাঁড়ান। অর্থাৎ পা দুটো প্রায় দেড় ফুট ফাঁক করে দাঁড়িয়ে একটু সামনের দিকে ঝুঁকে হাঁটু সামান্য ভেঙে হাত দুটো উরুর উপর রাখুন। এবার হাঁটু দুটো আরেকটু ফাঁক করে দিন। ঘাড় ও কাঁধের মাংসপেশী দৃঢ় করে দেহের মধ্য অংশের মাংসপেশী শিথিল করে দিন। এবার ধীরে ধীরে দম ছেড়ে দিয়ে পেট একেবারে খালি করে দিন এবং দম বন্ধ রেখে এখন রেকটাস পেশীদ্বয়কে সঙ্কুচিত ও টেনে তলপেটের মাঝখানে নিয়ে আসুন। অর্থাৎ তলপেট ভেতরের দিকে টেনে পেটের দুপাশের পেশীগুলো চেপে পেটের মধ্যস্থলের পেশীটি শিথিল করে ফুলিয়ে দিন। এ অবস্থায় তলপেটের মাঝখানটা দৃঢ় হবে এবং দু’ধার নরম হবে। এই প্রক্রিয়াকে মধ্যম নৌলী বলে। সহজভাবে যতক্ষণ সম্ভব এই অবস্থায় থাকুন।
এরপর শ্বাস নিতে নিতে দেহ শিথিল করে সোজা হয়ে দাঁড়ান। এভাবে মুদ্রাটি তিনবার করুন।
মধ্যমনৌলী ভালোভাবে অভ্যাস হয়ে গেলে এরপর কিছুদিন বামনৌলী ও ডাননৌলী অভ্যাস করুন। এরপর বাম, ডান ও মধ্যমনৌলী একসঙ্গে অভ্যাস করুন।
পদ্মাসনে বসে মুদ্রাটি একইভাবে করতে হয়। তবে এ ক্ষেত্রে পা বদল করে করে মুদ্রাটি অভ্যাস করতে হবে। অবশ্যই এ মুদ্রা খালিপেটে করা উচিৎ।

বাম ও ডাননৌলী:
রেকটাস পেশীদ্বয় পৃথকভাবে সঞ্চালিত করলে বাম ও ডাননৌলী হয়। যখন বাম রেকটাসকে সঙ্কুচিত করে ডান রেকটাসকে স্ফীত করা হয়, তাকে দক্ষিণ বা ডাননৌলী বলে। এ অবস্থায় তলপেটের বাঁ ধার নরম ও নিচু থাকবে।
একইভাবে ডান রেকটাসকে সঙ্কুচিত করে বাঁ রেকটাসকে ফুলিয়ে তুললে বামনৌলী বলা হয়।
বাম, ডান ও মধ্যম নৌলী ভালোভাবে অভ্যাস হয়ে গেলে তিনটি একসঙ্গে দুই বা তিনবার করে মোট ছয় বা নয় বার করুন।

উপকারিতা:
উড্ডীয়ান মুদ্রার সব গুণ নৌলীতে রয়েছে। এতে অল্পসময়ে আরো ভালো ফল পাওয়া যায়। ভুক্তদ্রব্য সহজে হজম হয়, কোষ্ঠবদ্ধতা, উদরাময় প্রভৃতি পেটের পীড়া নিরাময় হয় এবং যকৃৎ, প্লীহা, মূত্রাশয় ইত্যাদির দোষ ও দুর্বলতা দূর হয়। মুদ্রাটি অভ্যাস রাখলে একশিরা, হার্নিয়া, হাইড্রোসিল ও কোনরকম স্ত্রী-ব্যাধি হতে পারে না। মেয়েদের গর্ভাশয়ের দোষ-ত্রুটি ও ঋতুকালীন অনিয়ম মুদ্রাটি অল্পদিন অভ্যাসে স্বাভাবিক হয়ে আসে।

নিষেধ:
যাদের হৃদরোগ, হার্নিয়া, হাইড্রোসিল, একশিরা, এ্যাপেন্ডিসাইটিস, অন্ত্রক্ষত প্রভৃতি রোগ আছে অথবা যাদের প্লীহা ও যকৃত অস্বাভাবিক বড়, তাদের রোগ নিরাময় না হওয়া পর্যন্ত মুদ্রাটি অভ্যাস করা উচিত নয়। ১২ বছরের কম বয়সী ছেলেদের এবং ঋতু প্রতিষ্ঠিত হয়নি এমন মেয়েদের জন্য মুদ্রাটি অভ্যাস করা বারণ।
[Images: from internet]

(চলবে...)

পর্ব: [৬৮][**][৭০]

No comments: