Saturday, April 18, 2009

[Yoga] ইয়োগা: সুদেহী মনের খোঁজে ।৪৭। আসন: কুর্মাসন।


ইয়োগা: সুদেহী মনের খোঁজে ।৪৭। আসন: কুর্মাসন।
রণদীপম বসু

কুর্মাসন (Kurmasana):
এ আসন অবস্থায় শরীরটাকে কুর্ম বা কচ্ছপের মতো দেখায় বলে আসনটির নাম কুর্মাসন।

পদ্ধতি (ক):


সামনে দু’পা ছড়িয়ে বসুন। এবার ধীরে ধীরে কোমর থেকে শরীরের উর্ধ্বাংশ সামনের দিকে যতটুকু সম্ভব নামিয়ে এনে কপাল বা চিবুক মেঝেতে লাগান এবং হাত দুটো দু’হাঁটুর নিচে দিয়ে দু’দিকে ছড়িয়ে দিন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০সেঃ থেকে ৩০সেঃ এ অবস্থায় থাকুন। এভাবে ২/৩ বার আসনটি অভ্যাস করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।

পদ্ধতি (খ):


সামনে দু’পা ছড়িয়ে বসুন। এবার দু’হাঁটু ভাঁজ করে হাঁটু দুটো দু’দিকে ছড়িয়ে রেখে দু’পায়ের পাতা উরুসন্ধির দিকে কিছুটা এগিয়ে এনে একত্র করুন যেন একটার সাথে আরেকটা মিশে থাকে। এখন ধীরে ধীরে কোমর থেকে শরীরের উর্ধ্বাংশ সামনের দিকে নামিয়ে এনে হাত দুটো দু’হাঁটুর নিচে দিয়ে দু’দিকে রের করে নিয়ে দু’দিক থেকে দু’পায়ের পাতার উপরের দিকে নমস্কারের ভঙ্গিতে চেপে ধরুন এবং দু’পায়ের জোড় করা গোড়ালির কাছে কপাল নামিয়ে প্রণামের ভঙ্গিতে মেঝেতে রাখুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০সেঃ থেকে ৩০সেঃ এ অবস্থায় থাকুন। এভাবে ২/৩ বার আসনটি অভ্যাস করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।


@ অর্ধ-কুর্মাসন (Ardha-Kurmasana):

পদ্ধতি :


হাঁটু ভেঙে পায়ের পাতা মুড়ে ঠিক গোড়ালির ওপর পাছা রেখে বজ্রাসনের ভঙ্গিতে সোজা হয়ে বসুন। হাঁটু দুটো একসঙ্গে লেগে থাকবে। এবার নমস্কারের ভঙ্গিতে হাত দুটো জোড় করে মাথার উপর তুলুন যেন দু’হাত দু’কানের সঙ্গে লেগে থাকে। এখন এই অবস্থায় দেহের উপরের অংশ সামনে নামিয়ে যতদূর সম্ভব সম্পূর্ণ প্রসারিত করে প্রণামের ভঙ্গিতে মেঝেতে কপাল ঠেকান। কপাল ও দু’হাতের কড়ে আঙুল মেঝেতে এবং পেট উরুর সঙ্গে লেগে থাকবে। তবে কনুই যেন মাটিতে বা মেঝেতে না লাগে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০সেঃ থেকে ৩০সেঃ এ অবস্থায় থাকুন। এভাবে ২/৩ বার আসনটি অভ্যাস করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।

@ সুপ্ত কুর্মাসন (Supta Kurmasana):

পদ্ধতি (ক):


সামনে দু’পা ছড়িয়ে বসুন। এবার ধীরে ধীরে কোমর থেকে শরীরের উর্ধ্বাংশ সামনের দিকে নামিয়ে হাত দুটো দু’হাঁটুর নিচে দিয়ে দু’দিকে রের করে নিয়ে হাত দিয়ে দু’দিক থেকে পা দুটোকে ঘাড়ের উপর তুলে দিন। কপাল মাটিতে লেগে থাকবে। এখন হাত দুটো পেছনের দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে কোমর পেঁচিয়ে এক হাত দিয়ে আরেক হাত শক্ত করে ধরে রাখুন এবং শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০সেঃ থেকে ৩০সেঃ এ অবস্থায় থাকুন। এভাবে ২/৩ বার আসনটি অভ্যাস করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।

পদ্ধতি (খ):


সামনের দিকে পা ছড়িয়ে বসুন। এবার দু’হাত দিয়ে ডান পায়ের ঠিক গোড়ালির উপর ধরে পা-টি উঁচু ক’রে টেনে এনে কাঁধের উপর রাখুন। একই পদ্ধতিতে বাঁ পা-টিও এনে কাঁধের উপর রাখুন। এ অবস্থায় দু’হাতের তালুর উপর ভর করে আস্তে আস্তে দেহটাকে যতটুকু সম্ভব উপরে তুলুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০সেঃ থেকে ৩০সেঃ এ অবস্থায় থাকুন। এভাবে ২/৩ বার আসনটি অভ্যাস করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।

কুর্মাসনের উপকারিতা:
এ আসনে শরীরের সকল অংশের কম-বেশি উপকার হয়। মেরুদণ্ড ও পেটের জন্য বিশেষ উপকারী। আসনটি অভ্যাস রাখলে মেরুদণ্ডের হাড়ের সংযোগস্থল নমনীয় থাকে এবং মেরুদণ্ডসংলগ্ন স্নায়ৃমণ্ডলী ও দু’পাশের পেশী সবল ও সক্রিয় থাকে। পেট ও কোমরের অপ্রয়োজনীয় মেদ কমিয়ে দেহের গড়ন সুন্দর করে।


নিষেধ:
যাদের হার্নিয়া বা এপেণ্ডিসাইটিস রোগ আছে এবং যারা উচ্চরক্তচাপে ভোগেন, রোগ নিরাময় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এ আসন করা উচিৎ নয়। আর যাদের প্লীহা, যকৃৎ রুগ্ন বা অত্যধিক বড়, তাদের অতি সতর্কতার সঙ্গে আসনটি করা উচিৎ। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ না নিয়ে ঝুঁকি নেয়া ঠিক নয়।
[Images: from internet]

(চলবে...)

পর্ব: [৪৬][**][৪৮]

1 comment:

frogelette said...

I am starting Yoga. It has been difficult. These poses that you have on your blog are mostly advanced so it seems. I love Yoga.