Saturday, April 11, 2009
[Yoga] ইয়োগা: সুদেহী মনের খোঁজে ।৪০। আসন: চন্দ্রাসন।
ইয়োগা: সুদেহী মনের খোঁজে ।৪০। আসন: চন্দ্রাসন।
রণদীপম বসু
# অর্ধ-চন্দ্রাসন (Ardha Chandrasana):
আসন অবস্থায় দেহটাকে আধেকটা চাঁদের মতো দেখায় বলে আসনটির নাম অর্ধ-চন্দ্রাসন।
পদ্ধতি (ক) :
দুই পা জোড়া করে সোজা হয়ে দাঁড়ান। হাত দুটো কানের সঙ্গে সংলগ্ন রেখে নমস্কারের ভঙ্গিতে মাথার উপর তুলুন। এবার কোমর থেকে শরীরের উপরাংশ ধীরে ধীরে যতটুকু সম্ভব পেছন দিকে বাঁকিয়ে নিন। হাঁটু যেন না ভাঙে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০সেঃ থেকে ৩০সেঃ এ অবস্থায় থাকার চেষ্টা করুন।
এরপর ধীরে ধীরে সোজা হয়ে দাঁড়ান। এভাবে আসনটি ২/৩ বার অভ্যাস করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।
পদ্ধতি (খ) :
দুই পা জোড়া করে সোজা হয়ে দাঁড়ান। হাত দুটো কানের সঙ্গে সংলগ্ন রেখে নমস্কারের ভঙ্গিতে মাথার উপর তুলুন। এবার কোমর থেকে শরীরের উপরাংশ ধীরে ধীরে যতটুকু সম্ভব ডানদিকে বাঁকিয়ে নিন। হাঁটু যেন না ভাঙে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০সেঃ থেকে ৩০সেঃ এ অবস্থায় থাকার চেষ্টা করুন।
এরপর ধীরে ধীরে সোজা হয়ে দাঁড়ান এবং শরীরের উপরাংশ একইভাবে বাঁ দিকে বাঁকিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০সেঃ থেকে ৩০সেঃ এ অবস্থায় থাকার চেষ্টা করুন। এভাবে আসনটি ২/৩ বার অভ্যাস করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।
উপকারিতা:
এ আসন অভ্যাসে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। প্লীহা, যকৃৎ, মূত্রাশয় প্রভৃতি পেটের দেহ-যন্ত্রগুলো সক্রিয় থাকে। আসনটিতে এড্রিনাল গ্রন্থির খুব ভালো কাজ হয়। দেহের সমস্ত স্নাযুজাল সুস্থ ও সক্রিয় থাকে এবং মেরুদণ্ড নমনীয় ও সবল হওয়ায় সহজে বার্ধক্য আক্রমণ করতে পারে না- যৌবন দীর্ঘস্থায়ী হয়। এছাড়া, আসনটি বুকের খাঁচার দোষ-ত্রুটি দূর করে এবং মেরুদণ্ড-সংলগ্ন স্নায়ুমণ্ডলী ও পিঠের দু’পাশের পেশী সুস্থ ও সক্রিয় রাখে। পেট ও কোমরের অপ্রয়োজনীয় মেদ কমিয়ে দেহকে সুঠাম ও সুন্দর করে।
# চন্দ্রাসন (Chandrasana):
আসন অবস্থায় দেহটাকে অনেকটা চাঁদের মতো দেখায় বলে আসনটির নাম চন্দ্রাসন (Chandrasana)।
পদ্ধতি (ক):
পা দুটো জোড়া করে সোজা হয়ে দাঁড়ান। হাত দুটো কনুই থেকে ভেঙে দু’হাত দিয়ে দু’কনুই ধরে বুকের উপর রাখুন কিংবা নমস্কারের ভঙ্গিতে দু’হাত জোড় করে মাথার উপর তুলুন। এবার দেহের উর্ধ্বাংশ পেছনদিকে বাঁকিয়ে গোড়ালির ঠিক উপরে যতটুকু সম্ভব কাছাকাছি নিয়ে আসুন। এক্ষেত্রে মাথা নিচু হতে থাকবে, কিন্তু মেঝেতে লাগবে না। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০সেঃ থেকে ৩০সেঃ এ অবস্থায় থাকুন।
এরপর ধীরে ধীরে সোজা হয়ে দাঁড়ান। প্রয়োজনে শবাসনে বিশ্রাম নিন।
পদ্ধতি (খ):
পায়ের পাতা মুড়ে হাঁটু ভেঙে হাঁটুর উপর দাঁড়ান। এবার কনুই থেকে হাত দুটো ভেঙে দু’হাত দিয়ে দু’হাতের কনুই ধরে বুকের উপর রাখুন। এখন দেহটি পেছনদিকে বাঁকিয়ে মাথা গোড়ালির উপর নিয়ে আসুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০সেঃ থেকে ৩০সেঃ এ অবস্থায় থাকুন।
এরপর উঠে হাত আলগা করে বসে বিশ্রাম নিয়ে একইভাবে আসনটি আবার করুন। এভাবে ২/৩ বার আসনটি অভ্যাস করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।
উপকারিতা:
আসনটিতে দেহের সব অংশের ব্যায়াম হয়। বিশেষভাবে ঘাড়, গলা, বুক, পেট, তলপেট, নিতম্ব, কোমর, বস্তিপ্রদেশ ও মেরুদণ্ডের খুব ভালো কাজ হয়।
অর্ধ-চন্দ্রাসন বা চন্দ্রাসনে মেরুদণ্ড পেছনদিকে বেঁকে যায় বলে অর্ধ-চন্দ্রাসন বা চন্দ্রাসন করার পর অবশ্যই পদ-হস্তাসন করা উচিৎ। পদ-হস্তাসনে মেরুদণ্ড সামনের দিকে বাঁকে। এ দু’ধরনের আসন পাশাপাশি অভ্যাস রাখলে মেরুদণ্ড সহজ ও নমনীয় থাকে।
# আসন-বৈচিত্র্য:
বহুল চর্চিত এই আসনের বেশ কিছু আকর্ষণীয় বৈচিত্র্য রয়েছে। উল্লেখযোগ্যগুলো-
@ পরিব্রত্যা অর্ধ-চন্দ্রাসন (Parivrtta Ardha Chandrasana):
@ বদ্ধ অর্ধ চন্দ্রাসন (Baddha Ardha Chandrasana):
@ অর্ধ বক্র চন্দ্রাসন (Ardha Bakra Chandrasana):
@ বদ্ধ পূর্ণ চন্দ্রাসন (Baddha Purna Chandrasana):
[Images: from internet]
(চলবে...)
পর্ব: [৩৯][**][৪১]
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment