Thursday, April 16, 2009
[Yoga] ইয়োগা: সুদেহী মনের খোঁজে ।৪৬। আসন: উৎকটাসন।
ইয়োগা: সুদেহী মনের খোঁজে ।৪৬। আসন: উৎকটাসন।
রণদীপম বসু
উৎকটাসন (Utkatasana):
পদ্ধতি (ক):
পায়ের পাতা দুটো ৭/৮ ইঞ্চির মতো ফাঁক ও সমান্তরাল রেখে সোজা হয়ে দাঁড়ান। হাত দুটো মাটির প্রায় সমান্তরালে সামনের দিকে মেলে দিন। এবার হাঁটু ভেঙে চেয়ারে বসার ভঙ্গিমায় বসুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০সেঃ থেকে ৩০সেঃ এ অবস্থায় থাকুন। এভাবে ২/৩ বার আসনটি অভ্যাস করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।
পদ্ধতি (খ):
দু’পায়ের আঙুলের ওপর ভর দিয়ে পায়ের গোড়ালি তুলে দাঁড়ান। হাত দুটো মাটির সমান্তরাল রেখে সামনে মেলে দিন। এবার হাঁটু ভেঙে মেরুদণ্ড সোজা রেখে গুহ্যদেশ বা নিতম্ব দু’পায়ের গোড়ালির ওপর রেখে রসুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০সেঃ থেকে ৩০সেঃ এ অবস্থায় থাকুন। এভাবে ২/৩ বার আসনটি অভ্যাস করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।
@ এক পদ উৎকটাসন (Eka Pada Utkatasana):
পদ্ধতি (ক):
প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়ান। এবার ডান পা ভাঁজ করে উঠিয়ে পায়ের অগ্রভাগ বাঁ পায়ের জানুর উপর রাখুন। হাত দুটো জোড় করে নমস্কারের ভঙ্গিতে বুকে রাখুন কিংবা মাটির সমান্তরালে সামনের দিকে মেলে দিন। এবার বাঁ পায়ের হাঁটু ভেঙে চেয়ারে বসার ভঙ্গিমায় বসুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০সেঃ থেকে ৩০সেঃ এ অবস্থায় থাকুন।
এরপর পা নামিয়ে হাত-পা আলগা করে সামান্য বিশ্রাম নিয়ে পা বদল করে একইভাবে আসনটি আবার করুন। এভাবে ২/৩ বার আসনটি অভ্যাস করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।
পদ্ধতি (খ):
দু’পায়ের আঙুলের ওপর ভর দিয়ে পায়ের গোড়ালি তুলে দাঁড়ান। এবার বাঁ পা ভাঁজ করে উঠিয়ে পায়ের অগ্রভাগ ডান পায়ের জানুর উপর রাখুন। হাত দুটো জোড় করে নমস্কারের ভঙ্গিতে বুকে রাখুন কিংবা হাত দুটো মাটির সমান্তরাল রেখে সামনে মেলে দিন। এবার ডান প হাঁটু ভেঙে মেরুদণ্ড সোজা রেখে গুহ্যদেশ বা নিতম্ব ডান পায়ের গোড়ালির ওপর রেখে রসুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০সেঃ থেকে ৩০সেঃ এ অবস্থায় থাকুন।
এরপর হাত-পা আলগা করে সামান্য বিশ্রাম নিয়ে পা বদল করে একইভাবে আসনটি আবার করুন। এভাবে ২/৩ বার আসনটি অভ্যাস করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।
@ পরিবৃত্ত উৎকটাসন (Parivritta Utkatasana):
পদ্ধতি (ক):
দু’ পায়ের পাতা জোড়া রেখে সোজা হয়ে দাঁড়ান। দু’হাতের তালু জোড়া করে নমস্কারের ভঙ্গিতে বুকের উপর রাখুন। এবার হাঁটু ভেঙে চেয়ারে বসার ভঙ্গিমায় বসুন। এখন কোমর থেকে শরীরের উর্ধ্বাংশ সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে বাঁ দিকে মোচর দিয়ে এমনভাবে বাঁকিয়ে নিন যেন ভাঁজ করা ডান হাতের কনুই বাঁ পায়ের বাম পার্শ্বে হাঁটুতে লেগে থাকে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০সেঃ থেকে ৩০সেঃ এ অবস্থায় থাকুন।
এরপর হাত-পা আলগা করে সামান্য বিশ্রাম নিয়ে আবারো চেয়ারে বসার ভঙ্গিমায় এসে নমস্কারের ভঙ্গিতে শরীরের উর্ধ্বাংশ সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে বিপরীত দিকে অর্থাৎ ডান দিকে বাঁকিয়ে একইভাবে আসনটি করুন যেন বাঁ হাতের কনুই ডান পায়ের ডান পার্শ্বে হাঁটুতে ছুঁয়ে থাকে।
এভাবে ২/৩ বার আসনটি অভ্যাস করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।
পদ্ধতি (খ):
দু’ পায়ের পাতা জোড়া রেখে সোজা হয়ে দাঁড়ান। হাত দুটো মাটির প্রায় সমান্তরালে সামনের দিকে বাড়িয়ে দিন। এবার হাঁটু ভেঙে চেয়ারে বসার ভঙ্গিমায় বসুন। এখন কোমর থেকে শরীরের উর্ধ্বাংশ সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে বাঁ দিকে মোচর দিয়ে বাঁকিয়ে ডান হাতের তালু বাঁ পায়ের বাম পার্শ্বে গোড়ালি ছুঁয়ে মাটিতে রাখুন এবং অন্য হাত অর্থাৎ ডান হাতটি প্রসারিত করে উপরের দিকে সোজা মেলে দিন। ঘাড় মাথা ঘুরিয়ে বাঁ হাত বা উপরের হাতের তালুর দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০সেঃ থেকে ৩০সেঃ এ অবস্থায় থাকুন।
এরপর হাত-পা আলগা করে সামান্য বিশ্রাম নিয়ে আবারো চেয়ারে বসার ভঙ্গিমায় এসে শরীরের উর্ধ্বাংশ সামনের দিকে ঝুঁকিয়ে বিপরীত দিকে অর্থাৎ ডান দিকে বাঁকিয়ে একইভাবে আসনটি করুন যেন বাঁ হাতের তালু ডান পায়ের ডান পার্শ্বে গোড়ালি ছুঁয়ে থাকে এবং ডান হাত সোজা উপরে অবস্থান করে। দৃষ্টি ডান হাতের তালুতে নিবদ্ধ থাকবে।
এভাবে ২/৩ বার আসনটি অভ্যাস করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।
উৎকটাসনের উপকারিতা:
আসনটি বিশেষভাবে পায়ের শক্তি বৃদ্ধি করে এবং পায়ের গঠন সুঠাম ও সুন্দর করে তোলে। এ আসন অভ্যাসে জানুর সংযোগস্থলের স্নায়ু ও পেশী সবল হওয়ায় হাঁটুতে বাত হতে পারে না, কটিবাত থাকলে সেরে যায় এবং পায়ের গোদ সারাতে সাহায্য করে।
[Images: from internet]
(চলবে...)
পর্ব: [৪৫][**][৪৭]
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment